মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে যা করবেন

রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে যা করবেন

স্বদেশ ডেস্ক:

ইউরিক অ্যাসিড হলো রক্তের মধ্যে পাওয়া যাওয়া একটি রাসায়নিক। এই রাসায়নিক আমাদের সবার শরীরেই রয়েছে। কিন্তু সমস্যা তখন তৈরি হয় যখন এর পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে যায়। আসলে ইউরিক অ্যাসিড হল প্রাকৃতিক বর্জ্য। প্রোটিন জাতীয় খাদ্য থেকে শরীরে পিউরিন পৌঁছায়। ইউরিক অ্যাসিড আমাদের শরীর থেকে পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার হজমের পর নির্গত হয়।

পিউরিন হল রাসায়নিক যৌগ যা কার্বন ও নাইট্রোজেন দ্বারা গঠিত। পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলে তখন হজমে সমস্যা হয়। কারণ আমাদের শরীর তা ঠিকমত হজম করতে পারে না। ফলে তখন শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বের হয়ে যায় কিডনির মাধ্যমে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে কাজ করে না। তখনই রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং সেখান থেকে গাউটের মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড আমাদের প্রত্যেকের শরীরেই রয়েছে। এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু সমস্যা তখনই বাড়ে যখন এটি শরীর থেকে নির্গত হতে পারে না এবং শরীরে কোনও অংশে জমতে থাকে। সাধারণত শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের একটি স্বাভাবিক স্তর রয়েছে। রক্তে ৬.৫ মিলি/ডিএল-এর মধ্যে ইউরিক অ্যাসিডের স্তর থাকলে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু এই মাত্রাই যখন ৭ মিলি/ডিএল ছাড়িয়ে যায় তখনই দেখা দেয় নানা সমস্যা।

 

বর্তমানে এই ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেলে কিংবা তা শরীর থেকে নির্গত না হতে পারলে, তা প্রভাব ফেলে শরীরে। এর ফলে মূলত দুই ধরনের রোগ দেখা দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়- এই ইউরিক অ্যাসিড হাড়ে বা গাঁটে জমতে শুরু করেছে। মূলত এটা পায়ের গাঁটে জমতে শুরু করে। এর ফলে জয়েন্টে ব্যথা শুরু হয়। এমনকি, হাঁটাচলা করতেও বেশ সমস্যা হয়।

যেহেতু অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড কিডনির মাধ্যমে নির্গত হয়, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে এটি কিডনিতেও জমতে পারে। এই ক্ষেত্রে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। এছাড়াও এমনটা ঘটলে পিঠে বা কোমরে ব্যথা শুরু হতে পারে। অনেক সময় প্রস্রাবের মাধ্যমে রক্তপাতও ঘটে। এগুলো শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ।

সাধারণত ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যার কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। এই ক্ষেত্রে প্রথম থেকে জীবনধারাকে নিয়ন্ত্রণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ডায়েটে সামান্য পরিবর্তন আনলে চট করে বাড়ে না ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা। কিন্তু এর জন্য আপনি কী করবেন? প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। সবুজ শাক-সবজি, ফল বেশি করে খান। সাইট্রাস ফল অর্থাৎ লেবুর রস বেশি করে খান। এর পাশাপাশি শরীরকে সক্রিয় রাখুন। নিয়মিত ৪০ মিনিট ব্যায়াম করুন। এতে শরীরও সুস্থ থাকবে এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও সহজে বাড়বে না।

যেসব বিষয় এড়িয়ে চলবেন: ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে করা যাবে না ধূমপান। পালংশাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়স, টমেটো সবজি না খাওয়াই ভালো। পাশাপাশি অতিরিক্ত প্রোটিন যেমন- খাসির মাংস, সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে চলুন। বিভিন্ন রকম ডাল খাওয়াও ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য ভালো নয়। শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে ওষুধের ওপর নির্ভর করতেই হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877